আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট খারিজ করেছে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিট খারিজ।

১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে, বাংলাদেশ উচ্চ আদালত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল করার জন্য দায়ের করা রিটটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। এই রিটটি খারিজ করার সময় আদালতের বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলাম। 

রিটকারী আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া নিজেই আদালতে শুনানি করেন এবং নিজের দেওয়া আগের বক্তব্য ‘নট প্রেস’ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে রিটটি দায়ের করা হয়েছিল।

শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে জানিয়েছেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো উদ্দেশ্য নেই কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিল করার। সংবিধানে সংগঠন ও রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে স্বাধীনতা রয়েছে, এই সরকার সেই স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। অতীতের কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে জড়িতদের অন্যায়ের বিচার আইন আদালতের মাধ্যমে হবে, কিন্তু রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা তার সমাধান নয়। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আওয়ামী লীগে অনেক ভালো নেতাকর্মী আছেন যারা তাদের আদর্শে বিশ্বাসী। তাই তাদের বিশ্বাসের দল নিষিদ্ধ করা আদালতের কাজ নয়। 

অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, নতুন স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে সকলের বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ জন্য রাজনৈতিক দল পরিচালনার স্বাধীনতা বন্ধ হওয়া উচিত নয়। তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, যা বিচার বিভাগের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। 

তিনি আরও বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আদালতে নিয়ে আসা ঠিক নয় এবং রিটকারীকে আদালতে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি, যা রিটের লোকাস স্ট্যান্ডের অভাব প্রমাণ করে। অতএব, এই রিট মেনটেনেবল নয়। 

রিটের অন্তর্ভুক্ত অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ সর্বনিম্ন ৩ বছর চেয়ে করা আবেদনটিও প্রথম শুনানির দিনে ‘নট প্রেস’ করে দেওয়া হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান অনুযায়ী রয়েছে এবং তাদের মেয়াদ আদালতের আদেশের জন্য নয়। 

এই পরিস্থিতিতে, হাইকোর্ট এই রিটটি খারিজ করে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার আবেদনটিকে অগ্রহণযোগ্য ও অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে।