আ.লীগের শাসনামলে গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা ঘটে যাওয়া গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি ৫ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কতগুলি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে তা চিহ্নিত করা এবং তাদের সত্যতা নিরূপণ করা।


মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ‘কমিশন অব ইনকয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ এর ক্ষমতাবলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই কমিশন গঠন করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কমিশনের অন্যান্য সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস এবং মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন। কমিশন তদন্ত সম্পন্ন করে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কমিশন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ঘটানো জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্ত করবে। এতে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), এবং কোস্টগার্ডসহ দেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে।

কমিশন গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্তকরণ এবং গুমের পরিস্থিতি নির্ধারণ করবে। কমিশন তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে গুমের ঘটনা সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ দাখিল করবে এবং সুপারিশ করবে। যদি গুম হওয়া ব্যক্তিরা পাওয়া যায়, তাদের আত্মীয়-স্বজনকে অবহিত করা হবে। এছাড়া, অন্যান্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত তদন্তের তথ্যও সংগ্রহ করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে প্রশাসনিক সহায়তা প্রদান করবে এবং কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয়নির্বাহ করবে। কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়ার ক্ষমতা থাকবে। কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন। 

এই কমিশন গঠনের মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য হলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ঘটে যাওয়া জোরপূর্বক গুমের ঘটনা সম্পর্কে সঠিক ও নিরপেক্ষ তথ্য সংগ্রহ করা এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

Post a Comment

0 Comments