ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন।
শাহবাগ থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ ৪০ থেকে ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, এবং ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, চিকিৎসকরা তাঁদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসকদের অবহেলায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা।
একইদিন মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসেন। তখন অন্য আরেক গ্রুপ চাপাতিসহ হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। এই সময়ে, চারজনকে হাতেনাতে আটক করে কর্তৃপক্ষ তাদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। এর পর, আরেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ওয়ানস্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারে রোগীর স্বজনরা ভাঙচুর চালায়। এতে নিরাপত্তা শঙ্কায় জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। আলটিমেটামের ২৪ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যান।
আজ রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন। ঢামেক নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ দুপুরে প্রশাসনিক ব্লকে একটি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন। চিকিৎসকরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল এবং ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠক করছেন সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ঢাকা মেডিকেল কলেজে পৌঁছে পরিচালকের কার্যালয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। এরই মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
0 Comments